নিজস্ব প্রতিনিধি: দালালের মাধ্যমে অবৈধভাবে লিবিয়া হয়ে সমুদ্র পথে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে ট্রলারডুবির ঘটনায় বাংলাদেশী ৭ যুবক নিখোঁজ রয়েছেন।
আরও পড়ুন: ইতালিতে বাংলাদেশি নারীর মৃত্যু
শনিবার (১২ আগস্ট) সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নিখোঁজ যুবকের স্বজনরা। তারা প্রত্যেকেই নরসিংদী জেলার বেলাব উপজেলার বাসিন্দা বলে জানা যায়।
নরসিংদীর নিখোঁজ সাত যুবক হলেন, বেলাব উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের কাঙ্গালিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে মোখলেছুর রহমান (২০) একই এলাকার মৃত হাছেন আলীর ছেলে আনোয়ার হোসেন, কামাল হেসেন (৩৪), ভাটের চর গ্রামের হাসান উদ্দিনের ছেলে মাসুদ রানা (২২), দুলালকান্দি গ্রামের হারুন রশীদ রশিদের ছেলে মনির হোসেন (২২), একই এলাকার আ. মোতালিব মিয়ার ছেলে রবিউল (৩৩), টান লক্ষ্মীপুর গ্রামের মহরম আলীর ছেলে স্বাধীন মিয়া (২০) ও নিলক্ষিয়া গ্রামের আমান মিয়া (২১)।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশি নিহত
এই সাত যুবকই ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা খরচ করে দুলাল কান্দি গ্রামের লাল মিয়া ছেলে জাকির হোসেন এবং নুর কাসেমের স্ত্রী শাহিনুরের (জাকিরের ফুফু) মাধ্যমে অবৈধভাবে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়েন বলে স্বজনরা জানান।
নিখোঁজ কামাল মিয়ার ছোট ভাই জামাল মিয়া বলেন, ৫-৬ মাস আগে আমার ভাইকে ১২ লাখ টাকার চুক্তিতে ইতালির উদ্দেশ্য প্রথমে লিবিয়া নিয়ে যায়, বেশ কিছুদিন গেম ঘরে রেখে গত বুধবার রাত ৮ টায় ডেঙ্গিতে করে ইতালির পথে যাত্রা করে, কিন্তু ৪০ মিনিট পর ডেঙ্গি ডুবে যায়।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ায় ২৫২ বাংলাদেশি আটক
জাকিরের তত্ত্বাবধানে যাওয়া লোকদের মধ্যে ১২ জন ফিরে আসলেও সাত জন নিখোঁজ রয়ে যায়। এ তথ্য জাকির হোসেন স্থানীয় মিলন মেম্বারের মাধ্যমে আমাদের জানায়।
নিখোঁজ রবিউলের ভাই ইব্রাহিম জানান, আমার ভাই আট মাস আগে লিবিয়া গিয়েছিল ভৈরবের দালাল রবিউল্লার মাধ্যমে। কিন্তু সেখানে ভাইকে বৈধ কোনো কাগজ করে দেয়নি।
দুলাল কান্দির দালাল জাকির হোসেন ইতালি যাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আমাদের কাছ থেকে ৯ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলো। এখন আমার ভাই নিখোঁজ। আমরা আমার ভাইয়ের সন্ধান চাই।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে গুলিতে বাংলাদেশি নিহত
রবিউলের স্ত্রী সাথী আক্তার বলেন, আজ থেকে ১৭ দিন আগে আমার স্বামীর সঙ্গে কথা হয়েছিল, সে বলেছিলো, আমার জন্য দোয়া করো। আমরা এখন গেম ঘরে আছি, আগামী বুধবারে ডেঙ্গিতে তুলবে, এ কথা বলে মোবাইল বন্ধ করে দেয়। তারপর থেকে আর কোনো যোগাযোগ করতে পারেনি।
দুলালকান্দি গ্রামের বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মিলন মেম্বার এ বিষয়ে বলেন, আমি খবর পেয়ে জাকির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করি।
ফোন দিলে মোবাইল অন্য একজন রিসিভ করে আমাকে জানায়, এ ঘটনায় ১২ জন উদ্ধার হলে ও সাত জনের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: কুয়েতে বাংলাদেশির মরদেহ উদ্ধার
এদিকে, জাকির হোসেন ও শাহিনুরের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। তাদের পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে তালা দিয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন।
বেলাব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. তানভীর আহমেদ বলেন, বিষয়টি শুনেছি তবে এখনও কোনো অভিযোগ আসেনি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: প্রেমের টানে পাবনায় মালয়েশিয়ান তরুণী!
নিখোঁজের সংবাদ লোক মুখে শুনেছি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আয়েশা জান্নাত তাহেরা বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, নিখোঁজদের বিষয়ে জানতে প্রবাসী ও বৈদেশি কর্মসংস্থানে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি।
সান নিউজ/এইচএন