নিজস্ব প্রতিবেদক: ছুটির দিনেও লাগামহীন ভাবে বেড়েই যাচ্ছে বাজারে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম। সাম্প্রতি এ ২ পণ্যের দামই নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। তবে বাজারের দৃশ্য পুরো ভিন্ন। এ সময় ব্রয়লার মুরগি কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা দরে। একই সাথে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে ডিম।
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকলে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে এমন চিত্রই দেখা যায়।
আরও পড়ুন: রেমিট্যান্সের ফলে বেড়েছে রিজার্ভ
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বাজারের সকল দোকানেই ব্রয়লার মুরগির দাম চাওয়া হচ্ছে ১৯০ টাকা কেজি। এছাড়াও সোনালী মুরগি (২৫০-২৬০) টাকা, লাল লেয়ার মুরগি ৩০০ টাকা এবং দেশি মুরগি (৫০০-৫২০) টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
তবে ব্রয়লার মুরগির দাম ১ দিনের ব্যবধানে ১০ টাকা কীভাবে বাড়লো এমন প্রশ্নের জবাবে বিক্রেতারা জানান, আজ পাইকারিভাবেই দাম বাড়ানো হয়েছে। সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে মুরগি কেনা সম্ভব হলে সেটি খুচরা বাজারে প্রয়োগ করা সম্ভব হতো। কিন্তু পাইকারিতেই আমরা বাড়তি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে। এর ফলে খুচরা বাজারেও এর একটি প্রভাব পড়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতে পৌঁছালো পদ্মার ইলিশ
আজাদ নামের এক বিক্রেতা জানান, গত সপ্তাহে পাইকারি ১৭০ টাকা কেজি দামে ব্রয়লার মুরগি কিনেছি। যার কারণে গত ১ সপ্তাহ ধরে ১৮০ টাকায় ব্রয়লার বিক্রি হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে পাইকারি ১৭৭ টাকা করে কিনতে হয়েছে। এ সময় অনেকে ১৮০ টাকা কেজিও কিনেছে। এর কারণে ১৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে হচ্ছে।
এদিকে ডিমের বাজার ঘুরে দেখা যায়, শুক্রবার লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে হালি (৪টি) (৫৩-৫৫) টাকা। ডজন (১২ টি) কিনলে গুণতে হচ্ছে ১২০ টাকা। আর ১ কেইস (৩০টি) কিনলে গুণতে হচ্ছে (৪০০-৪২০) টাকা।
খুচরা দোকানের বিক্রেতা জানান, সপ্তাহ জুড়েই ডিমের দাম বাড়তি ছিলো। দেশে বন্যার কারণে বিভিন্ন এলাকার ফার্ম গুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর কারণে বাজারে ডিমের দাম বাড়তি। তবে মনে করা যাচ্ছে কিছুটা সময় লাগবে এই দাম কমতে।
আরও পড়ুন: ভারতে গেল বাংলাদেশের ইলিশ
বাজার করতে আসা এক ক্রেতা বলেন, বাজারে বিক্রেতাদের বাহানার কোন অভাব নেই। বাজারে প্রতিটি জিনিসের দাম অনেক বেশি। সাড়ে ১৩ টাকার থেকেও বেশি দিয়ে ১টি ডিম কিনতে হচ্ছে। এখন আমরা কোথায় যাবো? সরকারের উচিত এ সব বিষয় কঠোরভাবে মনিটরিং করা। কেননা সাধারণ মানুষ খুবই খারাপ অবস্থার মধ্যে রয়েছে।
আরেক ক্রেতা জানান, বিগত কয়েকদিন আগেও ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকা কেজি দরে কিনেছি। আর আজকে ১৯০ টাকা দাম বলছে। এর মধ্যে এমন কি হয়েছে যে, ১০ টাকা দাম বাড়াতে হবে? ডিম আর মুরগির দাম বেঁধে দেওয়ার পরেও দাম আরও বেড়েছে। তাহলে দাম নির্ধারণ করে লাভ কী হলো?
তার আগে রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) মুরগি ও ডিমের দাম নির্ধারণ করে দেয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক। তার সই করা এক চিঠিতে বলা হয়, সারাদেশে ডিম খুচরা পর্যায়ে ১১.৮৭ টাকা, সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ২৬৯.৬৪ টাকা এবং ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৭৯.৫৯ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এমনকি চিঠিতে মুরগি (সোনালি ও ব্রয়লার) ও ডিমের নির্ধারিত যৌক্তিক মূল্য (উৎপাদক, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে) সঠিকভাবে বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।
আরও পড়ুন: হিলিতে কমছে না পেঁয়াজের দাম
নতুন নির্ধারিত এই মূল্য অনুযায়ী ডিমের মূল্য উৎপাদক পর্যায়ে ১০.৫৮ টাকা , পাইকারি পর্যায়ে ১১.০১ টাকা এবং খুচরা পর্যায়ে ১১.৮৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এ সময় কেজিপ্রতি সোনালী মুরগি উৎপাদক পর্যায়ে ২৬০.৭৮ টাকা , পাইকারি পর্যায়ে ২৬৪.৫৭ টাকা এবং খুচরা পর্যায়ে ২৬৯.৬৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর কেজিপ্রতি ব্রয়লার মুরগি উৎপাদক পর্যায়ে ১৬৮.৯১ টাকা , পাইকারি পর্যায়ে ১৭২.৬১ টাকা এবং খুচরা পর্যায়ে ১৭৯.৫৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
সান নিউজ/এমএইচ